সহজ কথায় ফ্রিল্যান্সিং হলো ঘরে বসে ইন্টারনেট এর মাধ্যমে টাকা উপার্জন। যা আপনি অনলাইনের ওয়েব সাইট রিলেটেড বিষয়ে বা নিজের স্কিল দিয়ে করতে পারেন। আপনার একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকলে এটি দিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে আয় করার সহজতম উপায় হলো ফ্রিল্যান্সিং। বর্তমামে ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় পেশা। তরুণ প্রজন্ম এর দিকে ব্যাপক ভাবে ঝুঁকছে। কারণ এখন প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তি ছাড়া জীবন অচল। চলুন তবে আজকের পোষ্টের আলোচনার বিষয় ফ্রি সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৩ (১০,০০০ টাকা উপবৃত্তি সহ) নিয়ে শুরু করা যাক বিস্তারিত।
কোথায় করবেন সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৩ সালে
হ্যাঁ ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে বাংলাদেশের জন্যে একটি সম্ভাবনাময় খাত। যেখান থেকে কয়েক বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রতি বছর আয় করা সক্ষম। এই আয় আরো বাড়ানোর উদ্দেশ্যে সরকারি ভাবে ফ্রিল্যান্সিং শেখার কোর্স চালু করেছে সরকার। এর মধ্যে বর্তমানে ফ্রি সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৩ চালু রয়েছে যেসব প্রজেক্টে –
- মহিলা বিষায়ক মন্ত্রণালয়ের অধিনে কোর্স।
- SEIP এর ফ্রিল্যান্সিং শেখার কোর্স।
- যুব উন্নায়ণের কোর্স।
- জন সংস্থান, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর কোর্স।
- এল ই ডি পি এর কোর্স।
- শেখ রাসেল আইটি কোর্স।
- শেখ কামাল আইটি কোর্স ইত্যাদি।
উক্ত কোর্স গুলোর মধ্যে কিছু আছে অনলাইন ভিত্তিক। আপনি গুগল সার্চ করে কোর্স গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।
সরকারের রানিং উপরোক্ত প্রজেক্ট সমূহে আপনি একজন দেশের নাগরিক হিসেবে সম্পূর্ণ ফ্রিতি সরকারী ফ্রিলান্সিং কোর্স করে নিতে পারবেন এবং কোর্স শেষে ১০,০০০/- কিংবা এর আশে পাশে উপবৃত্তি সুবিধা ও থাকছে।
সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করার প্রস্তুতি যেভাবে নিবেন
সরকারি প্রশিক্ষণ কোর্স গুলোতে আবেদন করাও সহজ। আপনি যে প্রতিষ্ঠান থেকে করতে চান সেখানে গিয়ে কথা বললে তারা আপনাকে এর নিয়মিত সম্পর্কে বলবে। যেমনঃ শেখ কামাল আইটি প্রশিক্ষণ প্রজেক্টটি সরকার বিভাগীয় ভিত্তিতে বিভিন্ন আইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে থাকে।
একটি শহরে তাই ৩/৪ টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাই এর দায়িত্ব পাবে। সেখানে গিয়ে কথা বললে নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ আবেদন করতে পারবেন। উক্ত প্রতিষ্ঠান আপনাকে জানিয়ে দিবে যদি কোন ভর্তি পরীক্ষা দিতে হয় সে সম্পর্কে। বেশিরভাগ প্রশিক্ষণে ভর্তি হতে পরীক্ষা দিতে হয় না। এক্ষেত্রে তা কোর্সের উপর নির্ভর করে।
যেমন আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজানিং শিখতে চান সেক্ষেত্রে সেখানে প্রতিযোগিতা বেশি তাই পরীক্ষা নিতেও পারে। অন্য দিকে এই সকল প্রশিক্ষণ বেকার জনগোষ্ঠীর জন্যে প্রযোজ্য। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পরিক্ষা নেয়া হয় না। যেমন ধরুণ যুব উন্নায়ণে। ফ্রিল্যান্সিং শেখার কোর্সে ভর্তির আবেদনের জন্যে আপনি অনলাইনেও আবেদন করতে পারেন।
এক্ষেত্রে যেই কোর্সে আবেদন করবেন সেখানের সাইটে ভিজিট করে ফর্ম পূরণ করতে পারেন। এবং এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারেন।
যোগ্যতা কতটুকু লাগে সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করার জন্য
ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কি যোগ্যতা প্রয়োজন তা অনেকেরই প্রশ্ন। কারণ যেহেতু এটি একটি কম্পিউটার রিলেটেড প্রশিক্ষণ তাই অনেকেই ভাবে এটি শিখতে খুব বেশি বড় শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন। প্রকৃত পক্ষে তা নয়। বেশির ভাগ কোর্স করতে ইন্টার কিংবা ম্যাট্রিক পাস করলেই হয়। তবে অনেক কোর্স আছে যেখানে আপনার অরিজিনাল সার্টিফিকেট দেখাতে হতে পারে এবং ফটো কপি জমা দিতে হতে পারে। তাই আপনি যদি মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পাস হয়ে থাকেন এই সকল কোর্সে আবেদন করতে পারেন।
বর্তমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে আপনার জীবনে কোন চাকরি পারফেক্ট বা উপযুক্ত? তবে পড়ে নিন যেকোন চাকরি পেতে দরকারি ৫টি পরামর্শ সম্পর্কে।
যেসব বিষয়ে সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করতে পারবেন
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্যে নানা বিষয় রয়েছে। আপনি কোনটি বাছাই করছেন তার উপর নির্ভর করে। তবে এটি সত্যি যে সব কোর্সে সব সুযোগ সুবিধা পাবেন না। সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্সে কি কি শেখানো হয় তা হলো-
- গ্রাফিক্স ডিজাইনিং।
- ওয়েব ডিজাইনিং।
- ওয়েব ডেভেলপিং।
- SEO
- সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং।
- ফটো এডিটিং ইত্যাদি।
আমি ইতিপূর্বে বলেছি যে এই কোর্স গুলো অফলাইন অনলাইন দুই জায়গাতেই আপনি করতে পারেন। আপনার এলাকায় কোথায় সরকারি ফ্রিল্যান্সিং করানো হয় তা আপনি খোঁজ নিতে পারেন। অথবা গুগলে সার্চ করে যে যে জায়গায় শেখানো হয় তার শাখা আপানার নিজের এলাকায় থাকলেও শিখতে পারেন। আর যদি অনলাইন করতে চান তাহলে আপনার একটি ল্যাপটপ কম্পিউটার এবং ওয়েব ক্যাম থাকলেই আপনি তা করতে পারবেন।

কোন কোর্সটি সময়োপযোগী হবে
বর্তমানে সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৩ থেকে গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েবসাইট ডিজাইন, এসইও, ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে যে কোনো একটি খুবই কার্যকরী ও সময় উপযোগী হতে পারে আপনার জন্য। এই কোর্স গুলোর যেকোনো একটি করলেও বেশ কিছু মার্কেটপ্লেসে আপনার জন্য কাজের সুবিধা রয়েছে।
আপনার হাতে যদি পর্যাপ্ত সময় থাকে ধরে নিন ২/৩ বছরের মতো তবে আপনার জন্য ওয়েব ডিজাইন কোর্স বেচে নেওয়া সময়োপযোগী হবে। বলা বাহুল্য যে ওয়েব ডিজাইনের ভবিষ্যত অত্যান্ত সুদূরপ্রসারী এবং এই সেক্টরে কম্পিটিটর ও কম থাকে বলে এক্সপার্ট হওয়ার পর সহজেই কাজ পাওয়া যা। এই সেক্টরের চাহিদা কখনো শেষ হবে না।
আবার আপনার হাতে যদি এতো সময় না থাকে অর্থাৎ যদি নূন্যতম ৬ মাস থেকে ১ বছর সময় থাকে তবে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং অথবা গ্রাফিক ডিজাইন থেকে যেকোনো একটি বাচাই করে নিতে পারেন। গ্রাফিক ডিজাইনে যদি ভালো দক্ষতা থাকে তবে আপনাকে মোটেও বসে থাকতে হবে না। এ সেক্টরে রয়েছে কাজের প্রচুর চাহিদা। অনলাইন বাজার অথবা অফলাইন দুটি ক্ষেত্রেই চাহিদা রয়েছে।
এবারে আসি ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে। মার্কেটিংকে বলা হয় একটা ব্যবসার প্রাণ। হোক সেটা অফলাইন কিংবা অনলাইন। বর্তমান সময়ে বড় বড় কোম্পানি গুলো অনলাইনে প্রচুর পরিমাণ অর্থ মার্কেটিং এর জন্য ইনভেস্ট করে চলেছে। যদি আপনি হতে পারেন একজন দক্ষ মার্কেটার। তবে এসব প্রতিষ্ঠান গুলোতে আপনার ভ্যালু রয়েছে অনেক। ফাইবার, আপওয়ার্কের মতো অনলাইন মার্কেটপ্লেস গুলোতেও রয়েছে অপ্রতুল কাজের চাহিদা এই সেক্টরে অভিজ্ঞদের।
আপনি এই পোষ্টে পড়তেছেন সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৩ সম্পর্কে। পাশাপাশি এ সম্পর্কিত নিম্নোক্ত আরও একটি পোষ্ট পড়ে নিতে পারেন খুব সহজে ব্যাংকে চাকরি পাওয়ার অবিশ্বাস্য উপায় সম্পর্কে।
কোনো খরচ আছে কিনা?
আশ্চর্য হলেও সত্যি এই যে সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করতে আপনার কোন টাকা খরচ হবে না। আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রমাণ দিয়েই আপনি আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া যদি কোন পরীক্ষা নিয়ে থাকে তাতে পাস করলেই আপনি এই কোর্স করার সুযোগ পাবেন। এই কোর্সের জন্যে সরকার থেকে উল্টো অনুদানও পেতে পারেন কোন কোন কোর্সে। কিন্তু আপনার নিজের কোন টাকা খরচ হবে না।
কোর্স শেষে কিভাবে কাজ করে ইনকাম করবেন
সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করে আপনি আপনার দক্ষতা প্রমাণ করতে পারলে ফ্রিল্যান্সিং এর মার্কেট প্লেইস গুলোতে কাজ করতে পারবেন। যেমন- আপ ওয়ার্ক, ফাইভার, গুরু ইত্যাদি। এছাড়া ব্যক্তিগত উদ্দোক্তা হয়ে আপনি নিজের প্রতিষ্ঠান খুলে কাজ করতে পারেন। যার মাধ্যমে আপনি নিজের ও অন্যের কর্মসংস্থান বানাতে পারেন। আবার অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের হয়েও কাজ করতে পারেন।
এটা নির্ভর করছে আপনি কেমন দক্ষতা অর্জন করতে পারছেন তার উপর। আপনি আপনার দক্ষতা দিয়ে বেশি কাজ করে বেশি কামাতে পারেন। আবার দেখা যাচ্ছে আপনি কি কাজ শিখেছেন তার উপরও এটি নির্ভর করে। তবে আপনি যা ইনকাম করবেন তা জমা হবে আপনার ওয়ার্ক প্লেইস একাউন্ট এ। এবং এখান থেকে আপনি উইথড্র করতে পারবেন।
শেষ কথা
পরিশেষে বলব এটি বর্তমান তরুণদের জন্যে একটি সুবর্ণ সুযোগ তাই এটি যত কাজে লাগানো যাবে তত বেশি আয়ের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে। আশাকরি সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৩ (free freelancing course in bangladesh) সম্পর্কিত পোষ্টটি পড়ার মাধ্যমে বর্তমানে আপনি এই সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখেন। আমাদের সাইটে ফ্রিল্যান্সিং টিপস নিয়ে নিয়মিত আর্টিকেল পাবলিশ করা হয় । তাই প্রয়োজন স্বাপেক্ষে মাঝে মাঝে ভিজিট করতে পারেন নতুন তথ্য পেতে।